স্বাস্থ্য মানব জীবনে ঈশ্বরের একটি অসীম দান ও অনুগ্রহ। সেজন্য ইসলাম ঈমানদারদের স্বাস্থ্য সচেতনতার দিকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। ঈশ্বর মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর উপাসনা করার জন্য। আর ইবাদত করতে হলে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকা জরুরি। কারণ শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকলেই একাগ্রতার সঙ্গে ইবাদত করা সম্ভব। তাই ইসলাম একজন ব্যক্তিকে, বিশেষ করে একজন মুমিনকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য জোরালোভাবে তাগিদ দিয়েছে।
যেমন অজু করতে হলে তাকে পানির বিশুদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। নোংরা, অপবিত্র পানি দিয়ে ওযু করলে সে অযু করবে না। অনুরূপভাবে যদি সে নামায পড়তে চায় তবে তাকে নামাযের সময় সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। ওয়াক্ত ব্যতীত অন্য সময়ে নামাজ পড়লে নামাজ হবে না বরং সে গুনাহগার হবে।
মানুষকে সুস্থ থাকতে হলে তাদের শরীর ও স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখতে হবে। একই সাথে, তাকে প্রতিদিন নিয়মিত তার শরীর এবং স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে হবে। কোনো অসচেতনতার কারণে সে যেন অসুস্থ না হয় সেদিকে সবসময় খেয়াল রাখতে হবে। যখন কোনো ব্যক্তি কোনো কারণে অসুস্থ হয়, আল্লাহ তাকে তার অসুস্থতার কারণে কল্যাণ দান করেন। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে অসুস্থ হলে কেয়ামতের দিন তাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে। তাছাড়া ইসলাম মানুষকে চিকিৎসা না দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুস্থ থাকতে উৎসাহিত করেছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) একটি হাদিসে বলেছেন, তাকে কি বলা হবে আমি তোমাকে সুস্থ করিনি?'
এ প্রসঙ্গে একটি হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘একজন শক্তিশালী মুমিন দুর্বল মুমিনের চেয়ে আল্লাহর কাছে উত্তম ও প্রিয়। তবে দুটোতেই ভালো আছে। '
তাই প্রত্যেক মুমিনের কর্তব্য হলো সর্বাবস্থায় নিজের শরীর ও স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া। ইসলামের নির্দেশ অনুযায়ী মুমিনকে প্রথমে খেয়াল রাখতে হবে যেন সে কখনো শারীরিক বা মানসিকভাবে অসুস্থ না হয়। অবশ্য কখনো কোনো কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে। এ ব্যাপারে কোনো ধরনের অলসতা করা উচিত নয়। এর কারণ হল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীদেরকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য উৎসাহিত করেছেন এবং যখন তিনি নিজে অসুস্থ হয়ে পড়লেন, তখন তিনি তাৎক্ষণিক চিকিৎসার চেষ্টা করেছেন। হাদিসে আছে, হযরত করিম (সা.) বলেছেন, ‘হে আল্লাহর বান্দারা! আপনার চিকিৎসা করা উচিত, কারণ আল্লাহ এমন কোনো রোগ সৃষ্টি করেননি যার প্রতিষেধক তিনি তৈরি করেননি। তবে এমন একটি রোগ আছে যার কোনো প্রতিষেধক নেই, সেটি হলো বার্ধক্য। '
চিকিৎসা সংক্রান্ত ইসলামের নির্দেশনা হলো রোগ অনুযায়ী চিকিৎসা করা। হাদিসে রাসুল করিম (সা.) বলেছেন, রোগ হলে আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয়। ’-মুসলিম